আখিরাত

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম শিক্ষা - আকাইদ | NCTB BOOK

আখিরাত-এর ধারণা

আখিরাত আরবি শব্দ। এর অর্থ পরকাল, পরজীবন, মরণোত্তর বা শেষ জীবন। ইসলামের পরিভাষায় আখিরাত বলতে মানুষের মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে বোঝায়।

পবিত্র কুরআান ও হাদিসে আখিরাতের জীবনকে দু'টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের নাম হলো 'বারযাখ' (স) বা কবরের জীবন, যা মৃত্যু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় পর্যায় হলো, কিয়ামত থেকে অনন্তকাল অবধি।

মহান আল্লাহর নির্দেশে কিয়ামতের মাধ্যমে জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। তারপর যখন আল্লাহর ইচ্ছা হবে তখন তিনি আবার সকলকে জীবিত করবেন। সকলে পুনরুত্থিত হয়ে হাশরের ময়দানে একত্রিত হবে। এরপর দুনিয়ার সকল কর্মের হিসাব গ্রহণ করা হবে এবং হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে জান্নাত কিংবা জাহান্নাম নির্ধারিত হবে। জান্নাত কিংবা জাহান্নামে প্রবেশের মাধ্যমে মানুষ অনন্ত জীবন লাভ করবে। মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের এ পর্যায় বা স্তরসমূহকে বলা হয় আখিরাত।

আখিরাতে বিশ্বাস বলতে বোঝায়, এ দুনিয়ার জীবনই মানুষের জন্য শেষ নয়, দুনিয়ার জীবনের কর্মফল বা প্রতিদান ভোগ করার জন্য পরকালের জীবন রয়েছে, যা হবে অনন্তকাল, এ ধারণাটিতে বিশ্বাস করা। আখিরাতে বিশ্বাস ইসলামের মৌলিক আকিদাহসমূহের মধ্যে অন্যতম। আল-কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন-

وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ

অর্থ: “আর তারা (মুত্তাকিগণ) আমিরাতে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।' (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪)

 

তাৎপর্য

আখিরাতের জীবন অনন্তকালের। এ জীবনের শুরু আছে শেষ নেই। আখিরাতের তুলনায় মানুষের দুনিয়ার জীবন অতি ক্ষনস্থায়ী। মহান আল্লাহ বলেন, এবং আখিরাতই হচ্ছে চিরস্থায়ী আবাস।' (সূরা আল-মু'মিন, আয়াত:(৩৯)

মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের দুনিয়ার জীবনের শুরু হয়। আর মৃত্যুর মাধ্যমে এ জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। ইহজীবনের কর্মের জন্য মানুষকে তার মৃত্যু-পরবর্তী আখিরাত জীবনে জবাবদিহি করতে হবে। দুনিয়ার জীবনে যারা ভালো কাজ করবে, আখিরাতের জীবনে তারা তার সুফল ভোগ করবে।

 

আখিরাতে বিশ্বাসের গুরুত্ব 

আখিরাতে বিশ্বাস করা ইমানের অন্যতম একটি মৌলিক বিষয়। তাওহিদ ও রিসালাতে বিশ্বাসের সাথে সাথে আখিরাতের জীবনকেও সত্য বলে মনে প্রাণে বিশ্বাস ও স্বীকার করা জরুরি। আখিরাতে বিশ্বাস ছাড়া মুমিন হওয়া যায় না। মহান আল্লাহ বলেন, 'আর কেউ আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসুলগন এবং আখিরাত দিবসের প্রতি অবিশ্বাস করলে সে তো ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়বে।' (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৬)

আখিরাতে বিশ্বাস মানুষের দুনিয়ার জীবনের সকল কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ, আখিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে আখিরাতে তার সকল কাজের জবাবদিহি করতে হবে। তাই জবাবদিহিতার ভয়ে সে তার কাজকর্ম সম্পর্কে সতর্ক থাকে এবং অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। আবার সে বিশ্বাস করে যে দুনিয়ার সকল ভাল কাজের পুরস্কার আখিরাতে পাওয়া যাবে। তাই সে ভাল কাজে আগ্রহী হয় এবং মন্দ কাজ পরিহার করে চলে। এ ভাবে আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে সৎকর্মশীল ও চরিত্রবান করে গড়ে তোলে। সর্বোপরি, আখিরাতে বিশ্বাসের ফলে মানুষের ইহকাল ও পরকালের জীবন সুন্দর, সফল, সার্থক ও শান্তিপূর্ণ হয়। তাই আমরা আখিরাতে দৃঢ় বিশ্বাস করব।

 

নিজে করি

আখিরাত বিষয়ক পাঠ থেকে আমাদের জীবনে করণীয় ও বর্জনীয়-

করণীয়

বর্জনীয়

১। ১।
২। ২।
৩।৩।
৪।৪।
৫। ৫। 

 

আখিরাতের জীবনের স্তরসমূহ

 

মৃত্যু

মৃত্যুর মাধ্যমে আখিরাতের জীবন শুরু হয়। মৃত্যুকে আরবিতে বলা হয় 'মাউত'। জীবন যেমন মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তেমনি মৃত্যুও মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশেই হয়ে থাকে। জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, “যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ।' (সূরা আল-মুলক, আয়াত: ২ )

মৃত্যু থেকে কারও বাঁচার কোনো উপায় নেই। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন-

كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ

জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।' (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫)

 

কবর বা বারযাথ

মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সময়কে কবর বা বারযামের জীবন বলা হয়। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন-

وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ

অর্থ: “আর তাদের সামনে বারযাখ থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।' (সূরা আল-মু'মিনুন, আয়াত: ১০) 

কবর বা বারযাখ জীবনে মুনকার ও নাকীর নামে দুজন ফেরেশতা তিনটি প্রশ্ন করবেন। প্রশ্নগুলো হলো-

১. তোমার রব কে?

২. তোমার দীন কী?

৩. রাসুলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হবে, এ ব্যক্তি কে?

দুনিয়ার জীবনে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশমতো চলে তারা এ প্রশ্নেসমূহের সঠিক জবাব দিতে পারবে। তারা বলবে, আল্লাহ আমার রব, ইসলাম আমার দীন এবং ইনি মুহাম্মাদ (সা.) আমার নবি। এরপর তাদের কবর হবে জান্নাতের মতো সুখের স্থান। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশমতো চলে না, তারা উত্তর দিতে পারবে না। তাদের কবর হবে অত্যন্ত কষ্টের জায়গা।

 

কিয়ামত 

কিয়ামত আখিরাত জীবনের একটি স্তর। ইসলামি বিশ্বাস মোতাবেক কিয়ামতের দুটি অবস্থা রয়েছে। আর তা হলো- মহাপ্রলয় এবং পুনরুত্থানের মাধ্যমে হাশরের ময়দানে দণ্ডায়মান হওয়া।

আল্লাহ এ বিশ্বজগতের সবকিছু মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর মানুষ ও জিন জাতিকে তিনি সৃষ্টি করেছেন। তাঁর ইবাদাত করার জন্য। কিন্তু এমন এক সময় আসবে যখন মানুষ আল্লাহকে ভুলে যাবে। তাঁর নাম নেওয়ার মতো আর কেউ থাকবে না। তখন মহান আল্লাহ এ বিশ্বজগৎ ধ্বংস করে দেবেন। মহান আল্লাহর হুকুমে নির্দিষ্ট সময়ে হযরত ইসরাফিল (আ.) শিঙ্গায় ফুঁক দেবেন। এর ফলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশ্বজগতের এ ধ্বংসের নাম কিয়ামত। একে মহাপ্রলয়ও বলা হয়। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন-

كُلِّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ

অর্থ : 'আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সবকিছুই ধ্বংসশীল।' (সুরা আল-কাসাস, আয়াত: ১৮৮)

এ মহাবিশ্বের সবকিছু ধ্বংসের বহু সময় পরে আবার আল্লাহর হুকুমে হযরত ইসরাফিল (আ.)-এর দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে মানুষ কবর থেকে এবং যে যেখানে থাকবে সেখান থেকে উঠে দাঁড়াবে। এ উত্থানকে কিয়ামত বলা হয়। একে পুনরুত্থান দিবসও বলা হয়। কিয়ামতের এ দু'টি অবস্থা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, "আর শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে। ফলে যাদের আল্লাহ ইচ্ছা করেন তারা ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সকলেই মূর্ছিত হয়ে পড়বে। অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখনই তারা দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে।" (সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৮)

 

হাশর 

হাশর শব্দের অর্থ মহাসমাবেশ বা একত্রিত হওয়া। পুনরুত্থানের পর ভীত-শঙ্কিত জিন ও মানুষ একজন আহ্বানকারী ফেরেশতার ডাকে এক বিশাল ময়দানে সমবেত হবে। ইসলামের পরিভাষায় এর নাম হাশর বা মহাসমাবেশ। মহান আল্লাহ বলেন-

يَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّوْرِ فَتَأْتُوْنَ أَفْوَاجًا

অর্থ : সে দিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হবে এবং তোমরা দলে দলে সমাগত হবে।' (সুরা আন-নাবা, আয়াত: ১৮)

মানুষ যে ময়দানে একত্রিত হবে ওই স্থানটিকে 'হাশরের ময়দান' বা পুনরুত্থানের ময়দান নামে আখ্যায়িত করা। হয়। সেখানে মানুষ ও জিন জাতির কৃতকর্মের হিসাব নিকাশ নেওয়া হবে এবং বিচারকার্য সমাধা করা হবে। আল্লাহ তা'আলা হবেন বিচারক আর সাক্ষী হবেন নবি-রাসুল ও ফেরেশতাগণ।

হাশরের ময়দানে মানুষের আমলনামা দেওয়া হবে। পুণ্যবানেরা ডান হাতে এবং পাপিরা বাম হাতে আমলনামা পাবে। হাশরের ময়দানে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে জীবনের সকল কৃতকর্মের জবাবদিহি করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন এ পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমণ্ডলীও; এবং মানুষ উপস্থিত হবে আল্লাহর সামনে- যিনি এক পরাক্রমশালী।' (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ৪৮)

আল্লাহ তা আলা আরও বলেন 'এটা (পুনরুত্থান) এজন্য যে, আল্লাহ প্রত্যেকের কৃতকর্মের প্রতিফল দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।' (সুরা ইবরাহীম, আয়াত: ৫১)

 

মীজান 

মীযান শব্দের অর্থ মানদণ্ড বা ওজন পরিমাপক। হাশরের দিন মানুষ ও জিনের পাপ-পুণ্যের ওজন করা হবে। আর যে পরিমাপক দ্বারা হাশরের দিন পাপ-পুণ্যের ওজন করা হবে তাকে ইসলামি পরিভাষায় মীযান বলা হয়। ভালো হোক, মন্দ হোক, মানুষের আমল তিল পরিমাণ ওজনের হলেও আল্লাহ তা'আলা হাশরের দিন তা উপস্থাপন করবেন এবং মীযানে তা ওজন করা হবে। মহান আল্লাহ বলেন, 'এবং কিয়ামতের দিন আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড। সুতরাং কারও প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি সরিষা পরিমাণ হয়, তবুও আমি তা উপস্থিত করব।' (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৪৭)

মীযানে যাঁদের পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে, তাঁরা হবেন জান্নাতের অধিবাসী। আর যাদের পাপের পাল্লা ভারী হবে তারা হবে জাহান্নামি। মহান আল্লাহ বলেন, 'এবং যাদের (পুন্যের) পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম। আর যাদের (পুণ্যের) পাল্লা হালকা হবে, তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, তারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে।' (সুরা আল-মু'মিনুন, আয়াত: ১০২-১০৩)

মীযানে পুন্যের পাল্লা ভারী করার জন্য আমাদের মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলতে হবে এবং বেশি বেশি পুণ্যের কাজ করতে হবে।

 

সিরাত

সিরাত অর্থ পথ, রাস্তা, পুল ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় সিরাত এমন একটি পুল যা কিয়ামত দিবসে জাহান্নামের ওপর স্থাপিত হবে। হাশরের ময়দানে বিচারকাজ সমাপ্ত হওয়ার পর সকল মানুষকে এ সিরাত অতিক্রম করতে হবে। সিরাত চুলের চেয়ে সূক্ষ্ম এবং তরবারি অপেক্ষা অধিক ধারালো হবে। (মুসলিম)

আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সর্বপ্রথম এ সিরাত অতিক্রম করবেন। ইমানদার তথা জান্নাতিগণ সিরাতের ওপর দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। ইমানদারদের আমল অনুসারে সিরাত নানারকম হবে। কারও জনা সিরাত হবে বিশাল মাঠের মতো। নিজ নিজ নেক আমল অনুসারে ইমানদারগণ অতি সহজে সিরাত অতিক্রম করতে থাকবেন। কেউ বিদ্যুৎগতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে, কেউ পাখির গতিতে, কেউ ঘোড়ার গতিতে, আবার কেউ দ্রুত কদমে সিরাত অতিক্রম করবেন।

আর যারা জাহান্নামি হবে তারা সিরাত অতিক্রম করতে পারবে না। তারা তা অতিক্রম করতে গিয়ে জাহান্নামে নিপতিত হবে। এ প্রসঙ্গে আল-কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তা (সিরাত) অতিক্রম করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। তারপর আমি মুত্তাকীদেরকে উদ্ধার করব এবং ...জালিমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় রেখে দিব। (সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৭১-৭২)

 

 

জান্নাত 

জান্নাত আরবি শব্দ। এর অর্থ উদ্যান বা বাগান। অভিধানে 'জান্নাত' এমন বাগানকে বলা হয় যার রয়েছে ঘন বৃক্ষরাজি। ফার্সি ভাষায় জান্নাতকে 'বেহেশত' বলা হয়। ইসলামি পরিভাষায়, দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনের পর পুণ্যবান মু'মিনদের জন্য পরকালে আল্লাহ তাআলা যে অনন্ত সুখময় চিরস্থায়ী আরামদায়ক স্থান তৈরি করে রেখেছেন, তার নাম জান্নাত। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের জন্য জান্নাত প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, 'পুরুষ অথবা নারীর মধ্যে কেউ সংকাজ করলে ও মু'মিন হলে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি অণু পরিমাণও জুলুম করা হবে না।' (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৪) জান্নাত পরম সুখ-শান্তির স্থান। সেখানে রোগ-শোক, জরা-মৃত্যু বা কোনো অশান্তি নেই। জান্নাতে আছে আরামের সব রকম ব্যবস্থা। সেখানকার আরাম-আয়েশ ও সুখ-শান্তির কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। মন যা চাইবে সেখানে তা পাওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা বলেন, 'সেখানে (জান্নাতে) তোমাদের জন্য রয়েছে যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো। এটি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আল্লাহর পক্ষ থেকে আপ্যায়ন।' (সূরা হা-মীম আস-সাজদা (কুসসিলাত), আয়াত : ৩১-৩২)

জান্নাতের স্তর: আল-কুরআন ও হাদিসে জান্নাতের আটটি স্তরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো-

 

১.জান্নাতুল ফিরদাউস।

২. জান্নাতুল মাওয়া

৩. দারুল মাকাম

৪. দারুল  কারার 

৫. দারুল নাইম 

৬. জান্নাতু আসন 

৭. দারুল খুলুদ 

৮. দারুস সালাম 

 

জাহান্নাম 

জাহান্নাম অর্থ আগুনের গর্ত, দোযখ, শাস্তির স্থান। ইসলামি পরিভাষায়, হাশরের ময়দানে বিচারের পর পাপীদের যে স্থানে শাস্তির জন্য প্রেরণ করা হবে, তাই জাহান্নাম।

যারা আল্লাহ, রাসুল ও ইমানের অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলোকে অস্বীকার করবে এবং বিভিন্ন অন্যায় ও পাপকাজে লিপ্ত হবে, তাদেরকে কিয়ামতের দিন জাহান্নামে নিপতিত করা হবে। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন, “তবে যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দেয়, জাহান্নামই হবে তার আবাস।' (সুরা আন- নাযি'আত, আয়াত: ৩৭-৩৯)

জাহান্নামে দুঃখ-কষ্টের সীমা নেই। সেখানে আছে ভীষণ শাস্তি। সেখানে রয়েছে প্রজ্বলিত আগুন, যা শরীরের মাংস হাড় থেকে পৃথক করে দেবে। আবার সৃষ্টি হবে নতুন মাংস ও চামড়া। এভাবে পাপীরা জাহান্নামে অনন্তকাল ধরে আগুনে পুড়তে থাকবে। জাহান্নামের আগুনের দহন ক্ষমতা দুনিয়ার আগুনের দহন ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের নবি কারীম (সা.) বলেন, 'তোমাদের এ পৃথিবীর আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ মাত্র।' (বুখারি) জাহান্নামে আগুন ছাড়াও নানা রকম শাস্তির ব্যবস্থা আছে।

জাহাগানের স্তর: অবিশ্বাসী ও পাপীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহ সাতটি জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন। এগুলো হলো-

 

১. জাহান্নাম

২. লাহা 

৩. হতামাহ

৪. সাঈর

৫. সাকার

৬. জাহীম

৭. হাবিয়া

 

আখিরাতে বিশ্বাসের প্রভাব

ধর্মের মূল চেতনা হলো বিশ্বাস- যা মানব জীবনের মূল চালিকাশক্তি। ইসলামি জীবন দর্শনে বিশ্বাসের অন্যতম মৌলিক বিষয় তিনটি। এগুলো হলো- তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস, রিসালাত তথা নবি-রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস এবং আখিরাত অর্থাৎ পরকালের প্রতি বিশ্বাস। আখিরাতে বিশ্বাস ইমানের তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। ইহজীবনে যে ভালো কাজ করবে আখিরাতে তার জন্য পুরস্কার থাকবে। আবার ইহজীবনে যে খারাপ কাজ করবে আখিরাতে তার জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে। তাই আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে দুনিয়ার জীবনে সৎকর্মশীল ও দায়িত্ববান হিসেবে গড়ে তোলে। আমিরাতের স্বার্থে সে দুনিয়ায় ভালো কাজ করতে উৎসাহী হয় এবং খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে। মহান আল্লাহ বলেন, পক্ষান্তরে যে তার প্রতিপালকের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজকে বিরত রাখে, জান্নাতই হবে তার আবাস।' (সূরা আন-নাযি'আত আয়াত: ৪০-৪১)

সর্বোপরি, আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে সৎকর্মের অনুপ্রেরণা জোগায়। আমিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি বিপদে ধৈর্যশীল হয় এবং অল্পে তুষ্ট থাকে। এছাড়া আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে অন্যায়, অত্যাচার, অনাচার, অবিচার, দুর্নীতি, মিথ্যাচার, অশ্রীল কাজকর্ম- এককথায় সকল মন্দ কাজ ও পাপাচার থেকে রক্ষা করে তাঁর চরিত্রকে পবিত্র রাখে। এর ফলে মানুষের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন সুন্দর, সফল, সার্থক ও শান্তিপূর্ণ হয়। তাই আমরা আখিরাত জীবনে দৃঢ় বিশ্বাস রাখব এবং উন্নত চরিত্র গঠন করব।

 

নৈতিক চরিত্র গঠনে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাসের ভূমিকা

নৈতিক চরিত্র গঠনে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইতোপূর্বে জেনেছি, ইসলামের মূল বিষয়সমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার নাম আকাইদ। আকাইদের মৌলিক বিষয়। তিনটি। যথা- তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত। নৈতিক চরিত্র বলতে বোঝায় কথা ও কাজে উত্তম রীতি-নীতির অনুশীলন, মার্জিত ও বিনয়ী হওয়া, উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া, সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা ইত্যাদি। দুর্নীতি, অন্যায়, অম্লীল, অশালীন ও পাপকর্মসমূহ পরিত্যাগ করা এবং অন্য ধর্মের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করাও নৈতিক চরিত্রের অন্তর্ভুক্ত।

নৈতিক চরিত্র মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। চরিত্রহীন মানুষের নীতিবোধ থাকে না। সে যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারে। ভালো-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যান কোনো কিছুরই সে পরোয়া করে না। সে শুধু নিজের লাভ ও কল্যাণই বোঝে। নীতিহীন মানুষও ঠিক তেমনি। সে কোনোরূপ আইন-কানুন, বিধি-বিধান মানতে চায় না। সে নৈতিক আচরণ প্রদর্শনে যত্নবান নয়; বরং নিজের লাভের জন্য সে অপরের ক্ষতিসাধন করে থাকে। মিথ্যা, প্রতারণা, ধোঁকা দেওয়া, পরচর্চা ইত্যাদি আচরণ তার চরিত্রে ফুটে ওঠে। সমাজে সে নানারূপ অশান্তি সৃষ্টি করে। ফলে সমাজের কেউই তাকে বিশ্বাস করে না। কোনো মানুষ তাকে ভালোবাসে না।

অন্যদিকে নৈতিকতা মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করে। নৈতিক চরিত্রবান মানুষ সমাজে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা লাভ করে। সকলেই তাঁকে সম্মান করে। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, সমাজের লোকজন সবাই তার ওপর আস্থা রাখে।

তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাসের সাথে নৈতিক চরিত্রের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। ইসলামের এই বিশ্বাসসমূহ মানুষকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়। যে ব্যক্তি আকাইদের এই বিষয়গুলো বিশ্বাস করে, তার চরিত্র সুন্দর হয়। সে সবসময় নীতি ও উত্তম আদর্শের অনুসরণ করে। অন্যায়-অত্যাচার, অশ্রীলতা থেকে সে সর্বদা দূরে থাকে। সে কখনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না; বরং সমাজ থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেষ্ট হয়।

তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি কখনো অনৈতিক কাজ করতে পারে না। কারণ, সে জানে তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে সর্বদা দেখছেন এবং তার সকল কাজের হিসাব রাখছেন। সুতরাং সে সর্বদা আল্লাহ তা'আলার হুকুমমতো জীবনযাপন করে। অন্যায়, অত্যাচার ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকে ।

আবার রিসালাতে বিশ্বাসী মানুষ নবি-রাসুলগণের চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাঁদের মতো সে-ও উত্তম চরিত্র অনুশীলন করে। উচ্চত ও অশালীন চলাফেরা, অনৈতিক আচার-আচরণ ও অশ্রীল কথাবার্তা তার থেকে কখনও প্রকাশ পায় না।

এমনিভাবে আখিরাতে বিশ্বাসী মানুষ জানে যে, মহান আল্লাহ তা'আলা তাকে সব সময় দেখছেন ও তার সব কথা শুনছেন এবং হাশরের ময়দানে তাকে তার সকল কর্মের হিসাব দিতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, 'কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা সে দেখতে পাবে। আর কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তা-ও সে দেখবে।” (সুরা আল যিলযাল, আয়াত : ৭-৮)

যে শুনিয়াতে ভালো ও নেক কাজ করবে, সে আখিরাতে চিরশান্তির জান্নাত লাভ করবে। আর দুনিয়ায় যে অন্যায় ও পাপ কাজ করবে আখিরাতে সে চরম শাস্তির মুখোমুখি হবে, তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। সুতরাং আখিরাতে বিশ্বাস মানুষকে দুনিয়ার জীবনে ভালো কাজ করতে উৎসাহিত করে। আখিরাতের সফলতা ও শান্তির আশায় মানুষ ভালো কাজ করে, সকলের সাথে মিলেমিশে চলে এবং উত্তম চরিত্রবান হয়। অন্যদিকে আখিরাতের শাস্তির ভয়ে মানুষ মন্দ ও অশ্রীল কাজ পরিত্যাগ করে। অন্যায়, অত্যাচার ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকে। এভাবে মানুষ আখিরাতে বিশ্বাসের ফলে নৈতিকতা অনুশীলন করে থাকে।

অতএব, নৈতিক চরিত্র গঠনে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা দৃঢ়ভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতে বিশ্বাস করব। আমাদের জীবনে নৈতিকতার অনুশীলন করব, অনৈতিক কাজ থেকে সব সময় দূরে থাকব। তাহলেই আমরা ইহকাল ও পরকালে সফলতা লাভ করতে পারব।

 

মুক্ত আলোচনা এবং দেয়াল পত্রিকা তৈরি

এতক্ষণে তুমি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গেছ। আশা করি সবকিছু বুঝতেও পেরেছো। এই যে এতকিছু তুমি এখন জানো এই সবকিছু কি তোমাদের তৈরি করা সেই তালিকায় ছিল? যদি না থেকে থাকে, তাহলে দেখো, আরও কত তথ্য পেয়ে গেলে এখন তোমরা। এই সব তথ্য নিয়ে এখন কাজটা কি মনে আছে? দেয়াল পত্রিকা তৈরি করা, তাই না? এখন তাহলে নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে নেয়াল পত্রিকায়। লেখার জন্য অনেক কিছু আছে। ঝটপট লিখে ফেলো সেই সবকিছু আর তোমাদের শিক্ষককে দেখিয়ে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নাও। বন্ধুদের সঙ্গেও আলোচনা করে নাও যাতে সবাই একই লেখা লিখে না। ফেলে। একই সঙ্গে তোমরা সবাই মিলে তোমাদের দেয়াল পত্রিকাটির ডিজাইন কেমন হবে, কাগজ কী হবে, কোন কোন রঙে লেখা হবে সেই সবকিছু ঠিক করে ফেলো।

মানে দেয়াল পত্রিকা তৈরির কাজের ৪ এবং ৫ নম্বর ধাপের কাজগুলো করে ফেলো। আর সবাই মিলে শিক্ষকের সহায়তায় নিজেদের কাজগুলো ভাগ করে ভালোভাবে বুঝে নাও। আর কিন্তু বেশি সময় নেই। দেয়াল পত্রিকা তৈরি করে সবার সামনে উপস্থাপন করতে হবে তো!

দেয়াল পত্রিকার এই সব লেখালেখির কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই শিক্ষকের সহায়তা নেবে। শিক্ষকও তোমাদের সঙ্গে ইসলামের মৌলিক বিষয় বা বিশ্বাসের ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। তার আলোচনাগুলোও মন দিয়ে শুনবে। সেখান থেকেও হয়তো তোমরা দেয়াল পত্রিকায় লেখার মতো কিছু পেয়ে যেতে পারো।

আর শুধু দেয়াল পত্রিকা তৈরি করলেই হবে না, একটা বড় অনুষ্ঠান করে দেয়াল পত্রিকাটি উদ্বোধনও করতে হবে। তাহলে, সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে হবে না? অনুষ্ঠানে কাদেরকে দাওয়াত করবে তা-ও ঠিক করে নিতে হবে। আর দাওয়াতের জন্য কার্ডও বানাতে হবে।

তাহলে এখন তোমাদের কাজগুলো হলো-

কাজ-৭ (দেয়াল পত্রিকার মূল কাজ) 

১. দেয়াল পত্রিকার জন্য লেখা ঠিক করা এবং শিক্ষককে দেখিয়ে লেখার ভুল সংশোধন করা।

২. দেয়াল পত্রিকাটি বানিয়ে ফেলা।

৩. দাওয়াত কার্ড বানিয়ে সেটি বিতরণের মাধ্যমে দেয়াল পত্রিকা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া।

৪.  দেয়াল পত্রিকার উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি কীভাবে চলবে (অনুষ্ঠানসূচি) তা ঠিক করা এবং অনুষ্ঠানে কে কোন কাজ করবে তা ঠিক করা ।

৫. অনুষ্ঠানসূচি অনুসারে যার যে কাজ তা ঠিকভাবে করার প্রস্তুতি নেওয়া।

 

দেয়াল পত্রিকা উদ্বোধন

একটি সুন্দর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অতিথিদের উপস্থিতিতে দেয়ালপত্রিকাটি উদ্বোধন করা হবে। এ সময় দেয়াল পত্রিকার কোন কাজটি তোমরা করেছ তা সবাইকে জানাবে। অথবা, তোমাদেরকে যদি অনুষ্ঠানে বিশেষ কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয় সেটি পালন করবে। দেয়াল পত্রিকা দেখে কে কী বলছে সেগুলোর নোট নেওয়ার চেষ্টা করবে। এটি তোমাদেরকে পরে অনেক সাহায্য করবে।

 

অন্যকে জানানো

দেয়াল পত্রিকা উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়ে গেলে তোমরা শিক্ষকের সাথে বসে অনুষ্ঠানে কী কী হলো তা নিয়ে আলোচনা করবে। তোমাদের মনে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে যদি তুমি আরও জানতে চাও তাহলে এ সময় শিক্ষককে জিজ্ঞেস করবে। শিক্ষক তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি হয়তো তোমাদের আরও তথ্য কোথা থেকে পেতে পারো তা-ও জানিয়ে দেবেন।

এবার তোমাকে একটু বাড়ির কাজ করতে হবে। কাজটা হলো-

কাজ-৮ (বাড়ির কাজ) 

দেয়াল পত্রিকা তৈরি এবং উদ্বোধনের এই পুরো অভিজ্ঞতাটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো। প্রতিবেদনে থাকবে-

১. ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে তুমি কী জানো? 

২. কেন ইসলামে বিশ্বাস স্থাপন করা প্রয়োজন?

৩. দেয়াল পত্রিকা তৈরির এই কাজটি থেকে তুমি কী কী শিখলে?

 

বাড়ির কাজটি করে এনে সেখানে তোমাদের শিক্ষকের স্বাক্ষর বা সাইন নেবে। কারণ, তারপর তোমাদের আর একটি ছোট্ট কাজ করতে হবে। শিক্ষকের স্বাক্ষর করা এই প্রতিবেদনটি নিয়ে গিয়ে এবার তোমাকে কী করতে হবে জানো? এবার তুমি তোমার থেকে বয়সে ছোট কাউকে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো কী তা শেখাবে বা বোঝানোর চেষ্টা করবে। পারবে না? কঠিন মনে হলেও কাজটা আসলে ততটা কঠিন না। একবার চেষ্টা করেই দেখো।

এই কাজটি করার মাধ্যমেই আমাদের ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনের কাজটি শেষ হবে।

 

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion